মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২০ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় নিখোঁজের ৪দিন পর আরমানের লাশ উদ্ধার চকরিয়ায় পুকুরে গোসলে নেমে দুই বোনের মৃত্যু জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের কাজ শুরু করবে মঙ্গলবার, থাকবে এক মাস বাংলাদেশকে ২০০ একর জমি ফিরিয়ে দিচ্ছে ভারত আওয়ামী লীগ হাতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে ‍না পারলে , জনগণ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবে না।: রিজভী কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর মিছিল ঘিরে সংঘর্ষে নিহত ১ পেকুয়ায় লবণ ব্যবসায়ীকে মারধর করে টাকা ছিনতাই উখিয়া ক্যাম্পে দুর্বৃত্তের গুলিতে ২ যবক নিহত মহেশখালীতে মাংসের দাম অতিরিক্ত রাখায় ৪ ব্যবসায়ীকে জরিমানা নায়িকারা ছোট কাপড় পরলে চলে, ঘরের বউদের চলে না : গোবিন্দের স্ত্রী

তাতারস্তানের দৃষ্টিনন্দন মসজিদ

ধর্ম ডেস্ক:
রাশিয়ার তাতারস্তানের রাজধানী কাজান। কাজান শহরের বৃহত্তম মসজিদ হলো কুল শরিফ মসজিদ। রাশিয়ার বৃহত্তম ভলগা নদীর তীরে এর অবস্থান। এখানের জনগোষ্ঠীর ৬৪ শতাংশই মুসলিম। তাই অসংখ্য মসজিদ রয়েছে কাজানসহ পুরো তাতারস্তানে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ও দৃষ্টিনন্দন হলো কুল শরিফ মসজিদ।

এই মসজিদ নির্মাণ করা হয় খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতাব্দে। রাশিয়ার কমিউনিস্ট শাসনামলে অন্য সব এলাকার মতো তাতারস্তানেও অনেক মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল। কমিউনিস্টরা বহু গির্জাও ধ্বংস করেছিল। কুল শরিফ নামক এক ব্যক্তি সেখানে কর্মরত একজন ধর্মীয় পণ্ডিত ছিলেন। ১৫৫২ সালে কাজান শহর আক্রান্ত হলে কাজান রক্ষায় যুদ্ধে নামেন ইমাম কুল শরিফ ও তার ছাত্ররা। সেই যুদ্ধে মারা যান ইমাম কুল শরিফ। মসজিদের ভেতরে অবস্থান করছিলেন তিনি। তাকেসহ পুড়িয়ে ফেলা হয় মসজিদটি। এতে এই আলেম শহীদ হন। ফলে রুশ বাহিনী কাজান শহর দখল করে নেয়।

এভাবে চলে যায় কয়েকশো বছর। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর মুসলিম বিশ্ব বিশেষ করে সৌদি সরকার ও তাতারি মুসলমানদের জোর দাবিতে মসজিদটি পুনর্নির্মাণের অনুমতি দেয় রুশ সরকার।

মসজিদের পুরনো ডিজাইন অক্ষুণœ রেখে নতুন ডিজাইন প্ল্যানে ১৯৯৬ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ১০ বছর পুনর্নির্মাণের কাজ চলে। তাতারস্তানে ইসলাম আগমনের ১ হাজার বছর উদযাপন উপলক্ষে ২০০৫ সালের ২৪ জুন সৌদি মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী সদস্য শায়েখ সালেহ বিন আবদুল আজিজ এই মসজিদটি উদ্বোধন করেন। সৌদি আরব ও আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন ইসলামি সংস্থার সহযোগিতায় নির্মিত হয় এই মসজিদটি। মসজিদের সামনে দাতা রাষ্ট্র, সংস্থা ও ব্যক্তির নামে একটি তালিকা রয়েছে। বর্তমানে এই মসজিদটি রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ।

এই মসজিদের আয়তন ১৯ হাজার বর্গমিটার। মসজিদের ভেতরে ৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। আর মসজিদের প্রাঙ্গণে প্রায় ১০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। বিশাল এলাকা জুড়ে চত্বর। চারপাশে দেয়ালঘেরা। এই মসজিদের অবস্থান বেশ উঁচুতে। ঘুরে ঘুরে মাটির ওপর নির্মিত সিঁড়ি ডিঙিয়ে যেতে হয় মসজিদে। ভলগা নদীর বাতাস বয়ে যায় শরীর ছুঁয়ে। সে এক ভালোলাগার অমল পরশ। তিন-চারটি গেট দিয়ে প্রবেশ করা যায় কুল শরিফ মসজিদে। মসজিদ চত্বরে উঠলে পুরো এলাকাটিকে চমৎকার দেখায়। মসজিদ লাগোয়া আরও কিছু ভবন আছে। সেগুলো প্রশাসনিক ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হয়। পানি সংরক্ষণ এবং অগ্নি নির্বাপণের জন্য যে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে, তাও মসজিদের গম্বুজের রঙে। সব মিলে এক অসাধারণ পরিবেশ।

মসজিদের কেন্দ্রীয় গম্বুজের উচ্চতা ৩৯ মিটার। বড় ৪টি মিনারের উচ্চতা ৫৭ মিটার করে। গাঢ় নীল রঙের বিশাল গম্বুজ ও চারটি সুউচ্চ মিনার বহুদূর থেকে চোখে পড়ে। রাতের বেলা মিনার ও গম্বুজে আলো জ্বলে উঠলে আরও চমৎকার লাগে কুল শরিফ মসজিদকে। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই মসজিদ। এখানে শুধু দুই ওয়াক্ত নামাজ হয়। জোহর ও আসর। বাকি সময় বন্ধ থাকে। তবে মসজিদটিতে নিয়মিত জুমার নামাজ আদায় করেন স্থানীয় মুসলমানরা। প্রতি ঈদের নামাজও অনুষ্ঠিত হয়। তখন মুসলমানদের ঢল নামে এখানে। নামাজের সময় ছাড়া বাকি সময় বন্ধ থাকে এই মসজিদের দরজা। রাশিয়ার ভোলগা অঞ্চলের মুসলমানদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য মসজিদ কমপ্লেক্সের একটি ইসলামি সাংস্কৃতিক জাদুঘর রয়েছে। এই জাদুঘরে কিছু প্রাচীন পা-ুলিপি ও একটি গ্রন্থাগার রয়েছে। গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোরআন মজিদ। ২ মিটার দৈর্ঘ্য ও দেড় মিটার প্রস্থের ৮০০ কিলোগ্রাম ওজনের ওই কোরআন স্কটিশ কাগজে ছাপা হয়েছিল। কাজানে আসা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ এই মসজিদ। মসজিদটির ছবি সংবলিত কার্ডও বিক্রি হয় আশপাশে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION